logo

অনুষ্ঠানসূচী

প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনাসভা

৮ মে, ২০১৯

৮ মে, ২০১৯-এ, পঃবঃ মহিলা কমিশন একটি আলোচনাসভার আয়োজন করে প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে।

আলোচনাসভাটিতে সভাপতি লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও, সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, আই এ এস, সচিব, মহিলা ও শিশুকল্যান দপ্তর, পঃবঃ সরকার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শ্রী অরূপ কুমার কোলে, এ সি পি, বিধাননগর কমিশনারেট।

এছাড়াও সাঁঝবাতির বনলতা পাল, হেল্প এজ ইণ্ডিয়া, ও অন্যান্য এন জি ওর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কিছু বয়স্ক নাগরিক, যাঁরা আমাদের কাছে সাহায্যের আর্তি নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের সাথেও কথা হয়, এবং তাঁরা তাঁদের সমস্যা ও লাঞ্ছনার কথা বলেন, তাঁদের ছেলেমেয়েদের, বা নাতি নাতনীদের হাতে।

আমরা তাঁদের সাথে কথা বলি ও যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়।

 

জেলা পরিদর্শন, মুর্শিদাবাদ

২৮ এপ্রিল, ২০১৯

২৮ এপ্রিল, ২০১৯ এ, অধ‍্যক্ষ, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, ও সদস্য স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডঃ দীপান্বিতা হাজারি মুর্শিদাবাদ জেলায়,  অ্যাসিড আক্রান্ত এক মহিলাকে দেখতে যান, মুর্শিদাবাদ জেলা মেডিকাল কলেজ ও হস্পিটালে।

অ্যাসিড আক্রান্ত ওই মহিলাকে তাঁর স্বামী অ্যাসিড খাইয়েছিলেন বলে মিডিয়া জানিয়েছিল।

অধ্যক্ষ ও সদস্যরা, আক্রান্ত মহিলাকে দেখেন, তাঁর চিকিৎসা ঠিকমতও হচ্ছে কীনা, খোঁজখবর করেন, ও তারপর তার ছেলের সঙ্গে কথাবার্তাও হয় তাঁদের।

 

জেলা পরিদর্শন, ১৪ এপ্রিল, ২০১৯

১৪ এপ্রিল, ২০১৯ এ, অধ‍্যক্ষ, লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বীরভূম জেলায় স্বধর গৃহ পরিদর্শনে যান, ও সেখানে থাকা মেয়েদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে কথা বলেন তাদের সঙ্গে।

 

নারী পাচার রোধ নিয়ে কর্মশালা

এপ্রিল ১০, ২০১৯

 

পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের তরফ থেকে পাচার রোধে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
বক্তব্য রাখেন, ইন্দ্র চক্রবর্তী, আইপিএস, কলকাতা সিআইডি এবং তপতী ভৌমিক, সংলাপ এনজিও-র সচিব।
কর্মশালাটি সম্পন্ন করেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, অধ্যক্ষ, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন, ও সভায় মহিলা কমিশনের সদস্য ও বিভিন্ন এন জি ও-র সদস্যরা উপস্থিৎ ছিলেন।

দুজন বক্তাই বলেন, পাচারের পদ্ধতি কিরকম বদলে গিয়েছে। আগে পাচার হলে মেয়েগুলিকে মারধোর করা হত, জোর করা হত দেহব্যাবসায় নামতে। এখন তাদের হাতে দামী মোবাইলের সেট ধরিয়ে দেওয়া হয়, তাদের এমন একটা জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত করানো হয়, যে সেটা তাদের নেশার মতো হয়ে যায়। বহু ক্ষেত্রেই মেয়েরা পাচার হয়ে যাচ্ছে শুধু সোশাল মিডিয়া সাহায্যে।

বক্তারা এও বলেন যে পাচারকারীরা এক একটি জেলায় এক এক রকম উপায়ে মেয়েদের ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। আড় ধরা পড়লেও বড় চাঁইরা ধরা পড়ে না, ছোট এজেন্ট বা মাসীদেরই ধরা যায়।

দুইজন বক্তা অবশ্য এও জানান, যে পাচারকারীরা সময়ের সাথে নিজেদের বদলে নিতে পেরেছে। তাই এই মুহুর্তে যদি আমাদের মেয়েদের বাঁচাতে হয়, এদেরকে মোকাবিলা করে, একটিই রাস্তা আছে। সবাইকে এক হয়ে লড়তে হবে। পুলিশ, সরকারী সংস্থা, এন জি ও, সমাজ, সবাই এক হয়ে লড়লে, তবেই এই সমাজের মারণ ব্যধির সাথে মোকাবিলা করা যাবে ঠিক করে, আর পাচার হয়ে যাওয়া মেয়ের সংখ্যা আস্তে আস্তে কমবে।

 

 

নারী নির্যাতন বিরোধী পক্ষকাল উপলক্ষ্যে কমিশনের বিশেষ সভায় উঠে এল নতুন দিক

গত ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮-এ পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে নারী নির্যাতন বিরোধী পক্ষকাল উপলক্ষ্যে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, সদস্য সচিব নর্ভু ওয়াংদি ভুটিয়া, অধ্যাপিকা শাশ্বতী ঘোষ, কমিশনের সদস্যা ডঃ দীপান্বিতা হাজারি প্রমুখ।

কমিশনের চেয়ারপার্সন তাঁর বক্তব্যে জানান, পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ এখনও কিছু সহযোগিতার অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে এই বিষয় নিয়ে। পরে উচ্চপদস্থ আধিকারিকের হস্তক্ষেপে মিটমাট হয়। পাশাপাশি, তিনি জানান, কমিশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতি তিন মাস নয়, এখন প্রতি মাসে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক জরুরি। তাহলেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এছাড়াও, কুশমন্ডীর নির্যাতিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেয়েটি বোলপুরের একটি হোমে রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সবরকম আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে।’

অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষ বলেন, ‘পিতৃতন্ত্র আজ সর্বত্র বিরাজমান। ফলে নারীবিরোধী বিবিধ কার্যকলাপ কমার কোনও লক্ষণ নেই।’ তিনি জানান, সকলকে বুঝতে হবে কোনও মেয়ে নিগ্রহ হলে, সেটা তার সম্মাণহরণ নয়, সেটা মানবাধিকার হরণের সামিল। তবে মেয়েরা যে কেবল বাইরেই নয়, বাড়িতেও অসুরক্ষিত। সেটা রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টেই স্পষ্ট। ফলে বলাই যায় ঘরে-বাইরে দু’জায়গাতেই মেয়েরা অত্যাচারের শিকার। এই প্রবণতা শেষ কবে হবে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

এরপর দীপান্বিতা চন্দ, সঙ্ঘিতা ভট্টাচার্য, শর্মিষ্ঠা আচার্য, পূর্ণিমা রায়ের মতো একাধিক মহিলা নিগ্রহ থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন। এই কাজে মহিলা কমিশনের যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল সেটাও উল্লেখ করেন তাঁরা। কমিশনের সদস্যা ডঃ দীপান্বিতা হাজারি তাঁর বক্তব্যে কন্যাভ্রূণ হত্যা নিয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘এটা মানসিকতার বদল। কন্যা সন্তান না বাঁচলে সমগ্র সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। এই মানসিকতা সকলকেই পরিবর্তন করতে হবে।’

এছাড়াও, কমিশনের সদস্য সচিব নর্ভু ওয়াংদি ভুটিয়াও এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

 

 

‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা’ নিয়ে কমিশনের আলোচনাসভা

গত ২৭ এপ্রিল, ২০১৮, শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিতা দে, সোমা সেনগুপ্ত, শীর্ষা গুপ্ত, রাজন্যা ভট্টাচার্যের মতো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।

এছাড়াও, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহিলা কমিশেনর চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, সদস্য সচিব নর্ভু ওয়াংদি ভুটিয়া-সহ কমিশনের বেশ কয়েকজন সদস্য। নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এই পদে আসার পর এই ধরনের মাত্র ২৭টি ঘটনা হাতে এসেছে। যা দিয়ে বাস্তব চিত্রটা বোঝা মোটেই সম্ভব নয়। এর থেকেই স্পষ্ট, যে সমস্ত মহিলার কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাঁরা এগিয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ, চাকরি হারানোর ভয় এখানে সবচেয়ে বেশি থাকছে।

তিনি এই ধরনের একাধিক ঘটনার বিবরণ দিয়ে সকলকে অনুরোধ করেন, সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। এর পাশাপাশি, অন্যান্য বক্তারা পরামর্শ দেন, এই ধরনের ঘটনা আটকাতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানান তাঁরা।

এই প্রসঙ্গে আসে বিশাখা রায়ের কথাও। মহিলাদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার ঘটনায় এই ধারায় বিচার করার প্রসঙ্গও আসে। সভায় উপস্থিত সকলেরই মতে, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আরও দ্রুততার সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি। এই বিষয়ে আইন রকক্ষদের আরও উদ্যোগী হতে হবে বলেই মতপ্রকাশ করেন তাঁরা।

অনুষ্ঠানে চেয়ারপার্সন জানান, কমিশনের করা উদ্যোগের কথা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দিতে সব কলেজে এই সংক্রান্ত অনুষ্ঠান করা হবে। যার মূল লক্ষ্যই হল, আগামী প্রজন্ম যাতে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয় এবং এই ধরনের অপরাধের সংখ্যা কমে। তাহলেই এই কমিশনের কাজের সার্থকতা।

 

 

 

আলোচনাসভা

গার্হস্থ্য হিংসা তার প্রতিকার

আয়োজকঃ পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন

৩০শে জানুয়ারী, ২০১৯

গার্হস্থ্য হিংসা রোধে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেন পঃ বঃ মহিলা কমিশন, ৩০শে জানুয়ারী, ২০১৯ এ।

সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন প্রাক্তন ম্যাজিস্ট্রেট কল্পনা দে , চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, সদস্য-সচিব নোরবু ওয়াংদি ভুটিয়া ও অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

সভা শুরু করেন  সভানেত্রী লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, এই বলে যে এই মুহূর্তে, পশ্চিম বঙ্গে গার্হস্থ্য হিংসার সংখ্যা উর্ধমুখী।

এর দু”টি কারণ থাকতে পারে।

১। গার্হস্থ্য হিংসা বেড়ে গেছে।

২। মেয়েরা আগের মতন ভয় পাচ্ছেন না। সামাজিক সচেতনতা বাড়ায় এগিয়ে আসছেন, অ প্রতিকার চাইছেন।

শ্রী গঙ্গোপাধ্যায় এও বলেন যে এক বছরের একটি প্রজেক্ট রাজ্য সরকার থেকে চালু করা হবে, কমিশন যেখানে কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে স্বামী বা স্ত্রী হলে একে অপরের ওপর নির্যাতন না চালায়, ও কেউ করলে, তাকে যাতে রুখতে পারে।

সভানেত্রী এন জি ও দেরও বলেন তাঁদের সাহায্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য অতীব প্রয়োজনীয়।

 

প্রধান বক্তাঃ প্রাক্তন ম্যাজিস্ট্রেট কল্পনা দে

প্রধান বক্তা, এই বলে শুরু করেন যে গার্হস্থ্য হিংসা যদি সত্যি থামাতেই হয়, তাহলে সচেতনতা ছড়ানো জরুরি জনমানসে। গার্হস্থ্য হিংসা রোধে আইন আছে, কিন্তু সেই আইন কার্যকরী করতে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।

গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে এক শতাংশ খবরগুলো খবরের কাগজে ছাপায় না, ও তথ্য বলছে যে ম্যাজিস্ট্রেট বা কোর্টের কাছে আসার অধিকাংশ মামলাই গার্হস্থ্য হিংসা সংক্রান্ত।

গার্হস্থ্য হিংসা রোধের মামলাটি তৈরী হয় ২০০৫-এ, ও ২৬শে অক্টোবর, ২০১৬ তে  লাগু করা হয়।

শহরের থেকে গ্রামবাংলার ছবিটা আরও খারাপ। বক্তা জানান যে এমনও কেস এসেছে, যেখানে শাশুড়ি বলছেন যে শশুর, ভাসুর, দেওর, সবাইকেই ঘরে ঢুকতে দিতে হবে নব বধুকে। মেয়েটির নিজের শরীর বা ইচ্ছা, কোনোটার ওপরেই অধিকার নেই।

গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধেও কোনো প্রতিকার নেই।

সার্ভিস প্রোটেকশন অফিসারের ভুমিকা খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ, কিন্তু জেলাগুলি ভীষণ বড় হওয়ায়, ও জেলাপিছু একজন করে অফিসার হওয়ায়, ইচ্ছে থাকলেও তাঁরা সব কাজ সমাধা করে উঠতে পারেন না।  বহু জেলাতে এই মুহূর্তে এই পদটি তৈরী করা হচ্ছে, যার ফলে বহু জেলাতেই  সার্ভিস প্রোটেকশন অফিসার নেই এই মুহূর্তে।

কোনো মেয়েকে তার বাড়ি থেকে তার স্বামীর মৃত্যুর পর যদি কেউ বার করে দিতে চায়, তাহলে সেটা গার্হস্থ্য হিংসা বলে ধার্য হবে, ও পুলিশের কাছে বিষয়টি নিয়ে যেতে পারে সে।

দেশে আরও পারিবারিক লোক আদালতের দরকার এই মুহূর্তে, কারণ অন্যান্য আদালতগুলি জন স্বার্থ মামলায় জর্জরিত।

এই সময়ে দেশে মেয়েদের সুরক্ষার্থে অনেক বেশী আইন আছে, পুরুষদের থেকে, কিন্তু চিন্তাধারা না বদলালে, সেগুলো অকেজো।

গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় মেয়েটিকে তৎক্ষণাৎ সাহায্য দেওয়া জরুরী। সে কি খাবে, কি পরবে, কোথায় থাকবে, যাতে আবার তার ওপর হামলা না হয়, এটা সঙ্গে সঙ্গে দরকার।

তাই এটির জন্য স্পেশাল কোর্ট থাকা উচিত, যেমন পোকসো অ্যাক্টের জন্য আছে।

একজন মহিলা একটি ছেলের থেকে দিনে বেশীক্ষণ খাটলেও তাকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবেই ভাবা হয়।

এদিকে, ক্রেতা সুরক্ষায় যত রকম বিজ্ঞাপন বা হোর্ডিং পড়ে, তার সিকিভাগও নারী সুরক্ষায় পড়ে না।

নিজের বাড়িই একটি মহিলার জন্য সবচেয়ে অরক্ষিত জায়গা, সেখানেই সে মান্সিক, যৌন ো শারীরিক নির্যাতনের সবচেয়ে বেশী সম্মুখীন হয়।

প্রোটেকশন অফিসারের উচিৎ নির্যাতিতাদের অবিলম্বে হোমে দেওয়া – সেই পরিবেশে, যেখানে তার ওপর কেউ অত্যাচার করতে পারবেনা। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রচূর মহিলা অফিসার চাই, যারা মেয়ে হিসেবে আরও বেশী সাহায্য করতে পারবে।

সর্বোপরি, সচেতনতার ভীষণই অভাব।

তার ওপর, গার্হস্থ্য হিংসা মামলায় দোষীদের মাত্র একবছরের সাজা হয়। বেরিয়ে এসে সে আবার হামলা করতে পারে।

কিন্তু সুখের বিষয় এই যে এই গার্হস্থ্য হিংসা রোধের যে আইন, সেটা নিয়ে মামলা শুধু স্ত্রী, মা বা বোন না, লিভ-ইন পার্টনার বা গৃহকর্মীরাও করতে পারেন।

 

আপাতত হিসাব

সভানেত্রী শেষে জানান যে এই মুহূর্তে, পশ্চিমবঙ্গে, শুধুমাত্র ২০১৮ তেই ২৭০০-র কাছাকাছি কেস জমা পড়ে মহিলা কমিশনের কাছে, যার মধ্যে ৫০০-৫৫০ তে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার মহিলারা রিপোর্ট করেছিলেন।  প্রত্যন্ত জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও বহু মানুষ লিখিত অভিযোগ জানান।

এক্ষেত্রে গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিকারের সাফল্যের হার পঃ বঃ মহিলা কমিশনের ৬০% থেকে ৭০%। এবং যাতে সহজেই এই রিপোর্টগুলি নেওয়া যায়, চিঠি ছাড়াও, হোয়াটস্যাপ-এও অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে।

কমিশন আরও তৎপর হওয়ায় পেণ্ডিং মামলাও কমেছে, ও পুলিশ এখন আগের মতন নয়, বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে, কমিশনের হস্তক্ষেপের পর থেকে।

 

সাইবার ক্রাইম ও তার প্রতিকার নিয়ে মহিলা কমিশনের বিশেষ আলোচনাসভা

সাইবার ক্রাইম কী, তার কুপ্রভাব, ও প্রতিকারের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনাসভা

২৯ অক্টোবর, ২০১৮

২৯ অক্টোবর, ২০১৮, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশন, সাইবার ক্রাইম ও তার প্রতিকার নিয়ে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করে।

বক্তা ১

সব্যসাচী, আই পি এস, ডি আই জি (পি অ্যান্ড ডাব্লু)

কলিকাতা পুলিশের ডি আই জি, আই পি এস সব্যসাচী, আলোচনাসভার মূল বক্তা ছিলেন

তিনি সাইবার ক্রাইম কি, ও সেটি কি করে আজকের দিনে একটি বহুমুখী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটি নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন যে সাইবার ক্রাইম একটি বহুমখী অপরাধ, যেটি আপাতত বহুমুখী আকার ধারণ করেছে, ও যার মোকাবিলা বহু ভাবে করতে হয়।

ভারতে ইন্টারনেটের প্রথম প্রচলন সাইবার ক্যাফের হাত ধরে। কিন্তু ২০০৭-০৮ নাগাদ বিএসএনএলের হাত ধরে ঘরে ঘরে ইন্টারনেট পৌঁছে যায়।

তখন কম্পিউটার ব্যক্তিগত বা পার্সোনাল যন্ত্র থেকে সাইবার স্পেসের আওতায় চলে আসে, যা সর্বত্র বিরাজমান।

মেল কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে, সেটা বলা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দুষ্কর।

যদি ইন্টারনেট একদিনের জন্যেও বন্ধ হয়ে যায়, ১৮০ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে, যা ভারতবর্ষের মতো দেশের সারা বছরের উপার্জনের সমান।

ভারতীয় দণ্ডবিধিতে অপরাধের আলাদা কোনো ব্যাখ্যা নেই। যা সাধারণের ক্ষতি করে, তাই অপরাধ। কিন্তু তাতে মানুষই অপরাধ করে ও ওপর মানুষের ক্ষতি হয়।  একে অপরের ক্ষতি থেকে যাতে বিরত থাকে, তাই শাস্তির প্রণয়ন।

তথাকথিত অপরাধ দু’ধরণেরঃ

  • যে অপরাধ থেকে শারীরিক ক্ষতি হয় কারো। যেমন খুন, ধর্ষণ, মারধোর
  • বিষয় সম্পত্তিজনিত অপরাধ

সাইবার ক্রাইম হলে ঠিক এই জিনিসটাই বদলে যায়। মানুষ তখন আর একক অপরাধী থাকে না। তার জায়গায়ঃ

  • কম্পিউটার লক্ষ্যবস্তু হয়ে যায়
  • কম্পিউটার অপরাধের যন্ত্র/ অস্ত্র হয়ে যায়
  • কম্পিউটারই আততায়ী ও অপরাধের মূল বিষয়বস্তু হয়ে যায়

সাইবারস্পেসে ঘটা অপরাধকেই সাইবার ক্রাইম বলে। তার প্রথম শিকার কম্পিউটার, মানুষটি ছায়া শিকার মাত্র। এ ক্ষেত্রে, কম্পিউটারই মুখ্য শিকার।

কম্পিউটার বলতে, পার্সোনাল কম্পিউটার, ল্যাপ্টপ, স্মার্টফোন, সবকিছুই হতে পারে।

যে জায়গার ভিতর এটি হয়ে থাকে, সেই স্পেস বা জায়গাটিকে চিহ্নিত করা অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে।

সাইবার ক্রিমিনাল বা সাইবার অপরাধী সাধারণত কারা হয়?

  • অসন্তুষ্ট আই টি কর্মচারী, যারা স্প্যাম মেল পাঠায়
  • টিনেজার বা কিশোর, যারা বহুক্ষেত্রেই না জেনে, এই প্রযুক্তির ব্যবহার অসদুদ্দেশ্যে করে ফেলে। বহু ক্ষেত্রেই শুরুটা না জেনে বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হয়, পরে একবার রক্তের স্বাদ পেলে অনেকেই বার বার একই কাজ করতে থাকে।
  • রাজনৈতিক হ্যাকার বা হ্যাক্টিভিস্ট, যারা বিপক্ষ দলের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ইচ্ছেমতন জিনিসপত্র আপ্লোড করে দেয়, বিশেষ করে ভোটের আগে। যেমন আপাতত কিছু কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের সাইবার ওয়ারিওর বানিয়ে রেখেছে।
  • পেশাদার হ্যাকারঃ এরা পুরোদস্তুর অপরাধী। এরা বড় কোম্পানীর ওয়েবসাইট হ্যাচক করে, হয় বিপক্ষ কোম্পানীর পয়সার বিনিময়ে, নয়তো এরা সেই ওয়েবসাইট গুলো হ্যাক করে, মুক্তিপণ চায়, এই কোম্পানীগুলির থেকে।

এদের খুঁজে বার করা শক্ত। এরা বহুক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের এটিএম গুলিতে গণ্ডগোল পাকায়।

  • ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দী
  • প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকা, বা ডিভোর্স হওয়া পূর্বপতী
  • মাওবাদী ও অন্যান্য জঙ্গী সংগঠন

কারা এর শিকার হয়?

  • সহজে বোকা হয় এমন কিছু মানুষ
  • লোভী লোকজন
  • অনভিজ্ঞ মানুষজন

সাইবার ক্রাইম কয় প্রকার ও কি কি?

  • হ্যাকিং
  • পর্ণ
  • সফ্টওয়্যার পাইরেসি বা চুরি
  • অনলাইনে কাউকে বদনাম করা
  • অনলাইনে কাউকে ষ্টক বা নজরদারী রাখা
  • ভাইরাস ছড়ানো
  • ওয়েব ডিফেস্মেন্ট বা কারো ওয়েবসাইট হ্যাক করে বদলে দেওয়া

কিন্তু সাইবার ক্রাইমকে তৎসত্ত্বেও পুরোপুরি চিহ্নিত করা যায়না।

তার সবচেয়ে বড় কারণ হল এটি এখনো ক্রমবর্ধমান, ও আরও প্রায় দশ পনের বছর না গেলে এটার যে শেষ কোথায়, জানা যাবেনা।

হ্যাক কেন হয়?

  • কোনো সংস্থার জরুরী তথ্য পাওয়া, বা তাদের হার্ড ডিস্ক হ্যাক করে, নিজে ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবহার করা।
  • ক্রেডিট কার্ড নাম্বার চুরি করতে
  • অন্যের পাসওয়ার্ড চুরি করা
  • অন্যের কম্পিউটার ব্যবহার করে কাউকে বিরক্ত করা
  • ফাইল চুরি করা
  • অন্যের ইমেল পড়া
  • নজরদারী
  • অন্য হ্যাকার দের দেখানো

কী দেখে বুঝবেন, যে আপনার মেশিন হ্যাক হয়ে থাকতে পারে?

  • ফাইল আপনা আপনি বদলে যাচ্ছে, বা হঠাৎ চলে আসছে।
  • অচেনা ফাইল আসে, বড় হয়ে যায় নিজের থেকেই
  • হার্ড ডিস্কের জায়গা কমে যাওয়া
  • কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়া
  • স্ক্রিনে অদ্ভূত মেসেজ ফুটা ওঠা
  • কম্পিউটার যখন তখন ক্র্যাশ করা
  • প্রোগ্রাম কাজ না করা
  • ইন্টারনেটের ব্যাবহাযোগ্য স্পীড কমে যাওয়া, বহুক্ষণের জন্য
  • হটাৎ দেখতে পাওয়া যে ইন্টারনেট অন্য কেউ ব্যবহার করছে
  • ল্যাপ্টপের বুটিং টাইম, বা কম্পিউটার চালু হওয়ার জন্য যে সময়টা নেয়, সেটা হটাৎ বেড়ে যাওয়া

পর্ণ দেখা বা ব্যবহার করা কী অপরাধ?

নিজের ঘরে বসে, নিজের প্রয়োজনে পর্ণ দেখা অপরাধ নয়, যতক্ষণ না সেটা সর্বসমক্ষে, বা অন্য কারো ওপরে, তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অন্যান্য সাইবার ক্রাইম

স্পুফিং

যে ইমেল গুলি দেখে মনে হয়, যে সেগুলির প্রেরক একটি সংস্থা , অথচ সেগুলি পাঠাচ্ছে অন্য কেউ, সেগুলিকে স্পুফড মেল বলে।

ওয়েব ডিফেসমেন্ট

এক সংস্থার ওয়েবপেজ হ্যাক করে অন্য কারো ওয়েবপেজ বসিয়ে দেওয়াকয়ে ওয়েব ডিফেসমেন্ট বলে।

যেমন, আইসিস বলে একটি জঙ্গি সংগঠন, পশ্চিমবঙ্গ সিয়াইডির পেজ হ্যাক করে নিজেদের জিনিস্পত্র বসিয়ে দেয়।

এই ধরণের অপরাধের শিকার সাধারণত সরকারী ওয়েবসাইট বা ধার্মিক সংগঠনের ওয়েবসাইট হয়ে থাকে।

ভাইরাস ছড়ানো

ম্যালওয়্যার বা ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বানানো সফ্টওয়্যার, যখন প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যারের সাথে জুডে, কম্পিউটারের ক্ষতি করে, সেটিকে ভাইরাস ছড়ানো বলে।

সাইবারস্পেসকে রক্ষা করা কেন জরুরি?

সাইবারস্পেস থেকে আপনার টাকা চুরি হয়ে যেতে পারে, আপনার গৃহের কোনো সদস্যের ক্ষতি হতে পারে, বা তার সামাজিক অবস্থান সঙ্কটাপন্ন হয়ে যেতে পারে।

নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন কী করে?

  • ফায়ার ওয়াল চালু রাখুন
  • অরিজিনাল সফ্টওয়্যার ইন্সটল করুন
  • পাস ওয়ার্ড ব্যবহার করুন

কী করণীয়?

  • অযথা অচেনা কারো ফ্রেণ্ড রিকোয়েস্ট অ্যাক্সেপ্ট করবেন না
  • অচেনা কারো মেসেজের উত্তর দেবেন না
  • যা সামনাসামনি করেন না, তা অনলাইন করবেননা
  • অচেনা ই-মেল বা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না
  • ব্লুটুথ বা ওয়্যারলেস চালু ছেড়ে যাবেন না
  • নকল সফ্টওয়্যার ইন্সটল করবেন না
  • রাস্তায় ওপেন ওয়্যাই-ফাই হটস্পট ব্যবহার সন্তর্পণে করুন

 অনলাইনে সুরক্ষিত থাকার সেরা উপায়

  • নিজেকে ও অপরকে সম্মান করুন
  • নিজেকে ও অপরকে সুরক্ষিত রাখুন
  • কপিরাইটকে সম্মান করুন
  • কম্পিউটার ও অন্যান্য প্রযুক্তিকে সুরক্ষিত রাখুন

Jalasampad Bhawan,Ground Floor and 10th Floor,Block – DF, Sector – 1,Salt Lake City,Kolkata – 700091

Top